৫০০ বছর ধরে চলে আসা তাকবীর স্লোগানে আযানের ধ্বনি শোনা যাবেনা বাবরি মসজিদের মাইক থেকে, পড়বেনা মুসলিমদের সিজদার চিহ্ন। চলবে মার্বেল পাথরের বেদিতে বসানো ৫১ ইঞ্চি উঁচু রামের মূর্তির পূজা। যে গম্বুজ এখানে মুসলিম শাসনের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো, সেখানে উগ্রবাদ আর ধর্মীয় বিদ্বেষের প্রতীক হয়ে উড়বে গেরুয়া পতাকা। মুগল সম্রাট বাবরের নির্দেশে তাঁর সেনাপতি মীর বাকী ১৫২৮ সালে ভারতের উত্তরপ্রদেশের ফয়েজাবাদ জেলার অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। শত বছর ধরে মসজিদ হিসেবে চলে আসা এই মসজিদকে বিংশ শতাব্দীতে এসে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা রাম মন্দির দাবী করতে থাকে, অথচ এর ঐতিহাসিক কোন সত্যতাই নেই। বার বার আদালতে মামলা গড়ালেও উগ্র হিন্দুরা তাদের দাবীর স্বপক্ষে কোন প্রমাণ দিতে পারেনি। তবুও জিঘাংসার বশবর্তী হয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা আর পেশিশক্তিকে ব্যবহার করে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে আদালতের ফরমায়েশি রায়ে মুসলিমদের থেকে কেড়ে নেওয়া হলো তাদের শত বছরের ঐতিহাসিক এই মসজিদ।
কেবলমাত্র হিন্দু ভোটারদেরকে উত্তেজিত করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যেই অতীতের মতো এবারও নির্বাচনের আগে ২২ জানুয়ারি বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির উদ্বোধন করছে বিজেপি সরকার। পনের শতকের ঐতিহাসিক স্থাপনা ৩২ বছর আগে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর রাষ্ট্রীয়ভাবে মহাসমারোহে সেখানে উদ্বোধন হচ্ছে রাম মন্দিরের। জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সোমবার এ মন্দির উদ্বোধন করার মাধ্যমে উগ্রবাদী বিজেপি সরকার আবারও তাদের চিরাচরিত মুসলিম বিদ্বেষের বার্তা দিলো, উপমহাদেশসহ সমগ্র মুসলিমদের মনের তৈরী করলো ঘৃণা ও ক্ষোভ, তৈরী করলো দীর্ঘমেয়াদী এক অনিশ্চয়তা। আমরা বিশ্বাস করি সময়ের ব্যবধানে আবারো ন্যয় প্রতিষ্ঠিত হবে, আবারও মসজিদের মিনার থেকে ভেসে আসবে একত্ববাদের ধ্বনি।
মন্তব্য